Header Ads Widget

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব

بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম নিশ্চয়ই আমি এ কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। হে নবী! আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদরের মর্যাদা কত বেশি? লাইলাতুল কদরের এক রাত হাজার মাসের চেয়েও বেশি মর্যাদামণ্ডিত। এ রাতে ফেরেশতাকুল এবং পবিত্র রহু (জিবরাইল) নাজিল হয় তাদের প্রভুর নির্দেশ নিয়ে। সে রাতে ফজর পর্যন্ত অনাবিল শান্তি ও কল্যাণ বিরাজ করে। সূরা কদর : ১-৫। পবিত্র লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আল কোরআনে পূর্ণ একটি সূরা নাজিল হয়েছে। হাদিসের কিতাবে অর্ধশতেরও বেশি সহি হাদিস রয়েছে এ রাতের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে। এ রাতটি রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ রাতকে পাওয়ার জন্যই ইতিকাফের বিধান। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদতে মশগুল থাকবে, তার আগের জীবনের সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবেন। বুখারি, মুসলিম। এ রাতের অশেষ ফজিলত থেকে যেন উম্মত বেখবর না থাকে তাই রসুল (সা.) নিজে ইবাদত করে উম্মতদের শিখিয়েছেন। আমাদেরও উচিত এই বরকতপূর্ণ রাত থেকে পেয়ালা ভরে বরকতের মধু পান করা। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে তাঁর ইবাদতের মাত্রা বাড়িয়ে দিতেন। এ সময় তিনি এত বেশি ইবাদতে মগ্ন থাকতেন যে, আর কখনো এভাবে কোমর বেঁধে ইবাদতে মগ্ন হতে তাঁকে দেখা যায়নি। বুখারি, তিরমিজি। অন্য বর্ণনায় আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানের শেষ দশকে রসুল (সা.) কোমর বেঁধে ইবাদত করতেন। তিনি নিজে রাত জেগে ইবাদত করতেন এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকেও জাগিয়ে তুলতেন। বুখারি, মুসলিম। শবে কদরের ফজিলত শবে কদরের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। এ রাতে অগণিত ফেরেশতাসহ হজরত জিবরাইল (আ.) দুনিয়ায় অবতীর্ণ হন এবং ফেরেশতারা দুনিয়ার সমস্ত অংশে ছড়িয়ে পড়েন। প্রত্যেক স্থানে রুকু–সিজদা করেন। মুমিন নর–নারীর জন্য দোয়ায় মশগুল হন। (তাফসিরে ইবনে কাসির)। এই মহান রজনীতে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য গুনাহগারকে মাফ করেন, তওবা কবুল করেন। এ রাতে মাতা–পিতা ও আত্মীয়স্বজনের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে তঁাদের কবর জিয়ারত ও তঁাদের জন্য দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন। এ রাতে পড়ার জন্য রাসুল (সা.) যে দোয়া শিখিয়েছেন তার অর্থ হলো, আল্লাহ, আজকের রাতে আমাকে শবে কদরের ফজিলত দান করুন, আমার কাজকর্ম সহজ করে দিন, আমার অক্ষমতা মার্জনা করুন, আমার পাপসমূহ ক্ষমা করুন। পবিত্র ও মহিমান্বিত রাতে আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত থেকে যারা বঞ্চিত থাকবে: মদখোর, মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ী; মাতা–পিতার অবাধ্য সন্তান; আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, ইচ্ছাকৃত নামাজ তরককারী, বিনা কারণে অপর মুসলমান ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী। (তাফসিরে কাশফুল আসরার, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৫৬৪)। উপরিউক্ত দোষে যারা দোষী এ রাতের বরকত পাওয়ার জন্য প্রথমেই তাদের তওবা করতে হবে। তাদের তওবা আল্লাহ কবুল করার পরই তারা এই রাতের ফজিলত লাভ করবে। এ রাতে যারা নিজের অপরাধ ক্ষমা চেয়ে এবং আল্লাহর রহমত কামনা করে কাঁদবে, তাদের দোয়া কবুল হবে। শুধু নামাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এ রাতে তিলাওয়াতে কোরআন জিকির, ইস্তিগফার, তাস​বিহ পাঠ, বেশি করে দরুদ শরিফ পড়া একান্ত করণীয়।

Post a Comment

0 Comments